Search

Custom Search

Friday, July 1, 2011


সিয়াম: রোযাদারের ঢাল স্বরূপ

লিখেছেন- মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ আহমাদ কারীম

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের একমাত্র প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। যিনি রামাদান মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল করেছেন, এবং এ মাসের সিয়াম আমাদের উপর ফরয করে দিয়েছেন। সালাত ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং তার পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর প্রতি।

পবিত্র রামাদান মাসের ফযিলত: রামাদান মাসের অনেক ফযিলত ও মর্যাদার কথা পবিত্র কুরআনুল কারীম ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সহিহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নিম্নে এ প্রসঙ্গে কিছু কথা আমরা তুলে ধরলাম:

১. এ মাসে আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেছেন:

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

يقول الله عز وجل: "شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدىً لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ

রামাদান মাস; যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য, এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী ও হেদায়াতের সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে এ মাসে উপনীত হবে সে যেন এ মাসের রোযা রাখে।

২. এ মাসে যে ব্যক্তি রোযা রাখবে তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে, অপর বর্ণনায় এসেছে: এমনকি পরবর্তী সকল গুনাহও।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه وفي رواية: وما تأخر.

যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাবের (সওয়াবের আশায়) সাথে রামাদান মাসের রোযা রাখল তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। অপর বর্ণনায় এসেছে এবং পরবর্তী সকল গুনাহও।

৩. এ মাসের রোযা রাখা একাধারে বছরের দশ মাস রোযা রাখার সমান:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

صيام شهر رمضان بعشرة أشهر وصيام ستة أيام بشهرين فذلك صيام السنة

রামাদানের রোযা দশ মাসের রোযার সমতূল্য, ছয় রোযা দু'মাসের রোযার সমান, এ যেন সারা বছরের রোযা।

৪. এ মাস বরকতময় মাস:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

أتاكم شهر رمضان شهر مبارك فرض الله عليكم صيامه...

তোমাদের কাছে এসেছে রামাদান মাস, বরকতময় মাস। আল্লাহ তোমাদের উপর এর সিয়াম ফরয করেছেন।

৫. এ মাসের প্রত্যেক রাতেই আল্লাহর পক্ষ হতে আহ্বানকারী কল্যাণের দিকে আহবান করে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

وينادي مناد كل ليلة يا باغي الخير هلم ويا باغي الشر أقصر....

এ মাসের প্রত্যেক রাতেই আল্লাহর পক্ষ হতে আহ্বানকারী ডেকে ডেকে বলে, 'হে কল্যাণ কামনাকারী, কল্যাণের দিকে এগিয়ে আস। হে অনিষ্টের অগ্রযাত্রী, থেমে যাও।'

৬. এ মাস সবর বা সহিষ্ণুতার মাস:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: صوم شهر الصبر وثلاثة أيام من كل شهر يذهبن وحر الصدر. رواه البزار ورجاله رجال الصحيح، قال الشيخ الألباني: حسن صحيح .

ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত এ হাদীসে রামাদান মাসকে সবরের মাস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ "সবরের মাসে রোযা রাখা ও প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা রাখা অন্তরের অস্থিরতা দূর করে থাকে।" [বায্যার, আলবানী বলেন হাসান-সহীহ]

৭. এ মাসের প্রথম রাত হতে জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং জান্নাতের গেটসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

وغلقت أبواب النار فلم يفتح منها باب وفتحت أبواب الجنة فلم يغلق منها باب

এ মাসের সম্মানার্থে এবং রোযাদারদের সম্মানে আল্লাহ্‌ তা'আলা জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেন এবং জাহান্নামের দরজা সমূহ বন্ধ করে দেন।

৮. এ মাসে দুষ্ট জিন এবং শয়তানকে শিকলাবদ্ধ করা হয়:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه و سلم: إذا كانت أول ليلة من رمضان صفدت الشياطين ومردة الجن

৯. এ মাসের প্রত্যেক রাতেই একদল লোককে জাহান্নাম হতে মুক্তি দেয়া হয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহিহ হাদীসে ইরশাদ করেন:

ولله عتقاء من النار وذلك كل ليلة " .

অর্থাৎ এ মাসের প্রত্যেক রাতেই আল্লাহ্‌ তা'আলা জাহান্নাম হতে একদল লোককে মুক্তি দিয়ে থাকেন।

১০. এ মাসে উমরা করা হাজ্জের সমপরিমাণ বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে হাজ্জ করার সমান।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

عن ابن عباس قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " إن عمرة في رمضان تعدل حجة " الحديث متفق عليه

"রামাদানে উমরা করা হাজ্জের সমপরিমাণ।" ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত।

১১. এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল কাদর যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম:

আল্লাহ তা'আলা সুরাতুল কাদরে বলেন:

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ

"কাদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।"

এর অর্থ হচ্ছে- এতে ইবাদত করা এবং নেক আমল করা হাজার মাস ইবাদত ও নেক আমল করার চেয়ে উত্তম। এর অর্থ এই নয় যে, কেবল এ রাত জেগে থাকাটাই হাজার মাসের ইবাদত বা আমলের চেয়ে উত্তম।



সিয়াম পালনের মর্যাদা ও ফযিলত:

১. সিয়াম রোযাদারের জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে ঢালস্বরূপ:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه و سلم: الصيام جنة من النار فمن أصبح صائما فلا يجهل يومئذ وإن امرؤ جهل عليه فلا يشتمه ولا يسبه وليقل إني صائم

রোযা জাহান্নাম হতে ঢাল স্বরূপ। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন রোযা রাখবে তখন সে যেন বাড়াবাড়ি না করে। যদি কোন মানুষ তার উপর বাড়িবাড়ি করে বা চড়াও হয়, তবুও সে তাকে গালিগালাজ করবে না। বরং সে বলবে, 'আমি রোযাদার।'

২. সিয়াম রোযাদারের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه وسلم: الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة يقول الصيام أي رب إني منعته الطعام والشهوات بالنهار فشفعني فيه يقول القرآن رب منعته النوم بالليل فشفعني فيه فيشفعان. قال الشيخ الألباني: صحيح، انظر حديث رقم: 3882 في صحيح الجامع

"কিয়ামতের দিন রোযা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, 'হে রব! আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও প্রবৃত্তির কামনা হতে বাধা দিয়েছি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, 'আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুমাতে দেয়নি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহন করুন। ফলে এ দু'য়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।"

৩. রোযাদারের জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ গেট রয়েছে যা দিয়ে কেবল রোযাদাররা প্রবেশ করবে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

ومن كان من أهل الصيام دعي من باب الريان

"আর যে ব্যক্তি রোযাদার হবে তাকে রাইয়ান নামক দরজা হতে ডাকা হবে।"

তিনি আর ও বলেনঃ

و قال صلى الله عليه وسلم: إن في الجنة بابا يقال له الريان يدخل منه الصائمون يوم القيامة لا يدخل منه أحد غيرهم يقال أين الصائمون فيقومون فيدخلون منه فإذا دخلوا أغلق فلم يدخل منه أحد.

জান্নাতে একটি গেট রয়েছে যার নাম হচ্ছে রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন কেবলমাত্র রোযাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। ঘোষণা করা হবে, 'রোযাদাররা কোথায়?' তখন তারা উঠে আসবে এবং এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তারা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে, আর কেউ এ গেট দিয়ে প্রবেশ করবে না।

৪.রোযা ব্যক্তির পরিবার ও সম্পদের ফেৎনার কাফ্ফারা স্বরূপ:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه وسلم: فتنة الرجل في أهله وماله ونفسه وولده وجاره يكفرها الصيام والصلاة والصدقة والأمر بالمعروف والنهي عن المنكر.

রোযা, নামায, সাদকা, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ ব্যাক্তিকে তার পরিবার, সম্পদ, জীবন, সন্তান- সন্ততি এবং প্রতিবেশীর ফেতনা হতে মুক্ত রাখে।

৫. রোযার প্রতিদান ও সাওয়াব আল্লাহ তাআলা নিজেই দিবেন:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীসে কুদসিতে ইরশাদ করেন:

قال الله عز وجل: كل عمل ابن آدم له إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزي به

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আদম সন্তানের সমস্ত আমল তার জন্য রোযা ছাড়া, রোযা আমার জন্য আমি রোযার প্রতিদান দেব।

৬. আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিনের রোযা ঔ রোযাদারকে জাহান্নাম হতে ৭০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে নেয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

ما من عبد يصوم يوما في سبيل الله ابتغاء وجه الله إلا باعد الله عن وجهه وبين النار سبعين خريفا.

যে বান্দাহ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোযা রাখে আল্লাহ তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরী করেন।

৭. রোযাদারের জন্য জান্নাতে কিছু রুম রয়েছে যার ভেতর থেকে বাইরে এবং বাইর থেকে ভেতরে দৃষ্ট হয়:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه وسلم: إن في الجنة غرفا يرى ظاهرها من باطنها وباطنها من ظاهرها أعدها الله تعالى لمن أطعم الطعام وألان الكلام وتابع الصيام وصلى بالليل والناس نيام.

জান্নাতের মধ্যে কিছু কক্ষ রয়েছে যার ভেতর থেকে বাইরে এবং বাইর থেকে ভেতরে দেখা যায় আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য এসব প্রস্তুত করেছেন যারা লোকদের খাবার খেতে দেয়, নরম কথা বলে, একাধারে সিয়াম পালন করে, যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে রাত জেগে নামায আদায় করে।

৮. রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেসকের চেয়েও সুগন্ধময়:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

والذي نفس محمد بيده لخلوف فم الصائم أطيب عند الله من ريح المسك

সে সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জীবন,রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেসকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম।

৯. রোযা কবরে ডান দিক থেকে রোযাদারকে পাহারা দেবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: অত:পর তার ডান দিক হতে রোযা এসে উপস্থিত হবে ....... আর রোযা বলবে আমার এদিক হতে তোমাদের কোন পথ নেই। অর্থাৎ রোযা আল্লাহর বান্দা রোযাদারকে ডান দিক হতে পাহারা দিতে থাকবে।

১০. রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

وللصائم فرحتان يفرحهما إذا أفطر فرح بفطره وإذا لقي ربه فرح بصومه.

রোযাদারের জন্য দু'টি খুশি রয়েছে,যাতে সে আনন্দ করবে, যখন সে ইফতার করবে, যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে।

১১. রোযাদারের দোআ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

إن للصائم عند فطره لدعوة ما ترد ( ابن ماجة: 1743)

রোযাদার ইফতারের সময় যে দোআ করেন তা ফেরত দেয়া হয় না অর্থাৎ, তার দোআ কবুল করা হয়।

কিয়ামু রামাদান বা রামাদানের তারাবীহের ফযিলত:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

عن أبي هريرة أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . قال الشيخ الألباني : صحيح

যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে রামাদানের তারাবীহ আদায় করল তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য এক হাদীসে এভাবে ইরশাদ করেছেন:

فقال إن الرجل إذا صلى مع الإمام حتى ينصرف حسب له قيام ليلة. قال الشيخ الألباني: الحديث صحيح انظر: صحيح سنن أبي داود

যখন কোন ব্যক্তি ইমামের সাথে ইমাম তার নামায শেষ করা পর্যন্ত নামায আদায় করবে তার জন্য তা সারা রাত জেগে ইবাদত করা হিসেবে গণ্য হবে।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেনঃ কিয়ামু রামাদান বা তারাবীহের নামাযের নির্দিষ্ট কোন রাকা'আত নেই, এ নামায মূলত: রাতের নামাযের মত, দু' রাকা'আত দু' রাকাআত করে যথাসম্ভব পড়তে থাকবে। ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত এ নামায পড়া যেতে পারে, তবে কোন মসজিদে কোন একজন ইমামের পেছনে ইমাম তাঁর নামায শেষ করা পর্যন্ত পড়া এ ক্ষেত্রে উত্তম।

রামাদানের শেষ দশ রাতের অতিরিক্ত ফযিলত:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ হাদীসে সাব্যস্ত আছে:

كان يعتكف العشر الأواخر من رمضان حتى قبضه الله

তিনি মৃত্যু পর্যন্ত রামাদান মাসের শেষ দশ রাত নিয়মিত ই'তেকাফ করতেন।

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

تحروا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان

তোমরা রামাদানের শেষ দশের বেজোড় রাত গুলিতে লাইলাতুল কাদর তালাশ কর। এ হাদীস হতে প্রমাণিত যে, লাইলাতুল কাদর রামাদানের শেষ দশ রাতের মধ্যে রয়েছে।

লাইলাতুল ক্বাদর এর বিশেষ ফযিলত:

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ

قال تعالى: إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ. وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ. لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ. تَنَزَّلُ الْمَلائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ. سَلامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ.

আমরা লাইলাতুল কাদরে তা (কুরআন) নাযিল করেছি, আপনি কি জানেনলাইলাতুল কাদর কি?লাইলাতুল কাদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, এতে ফিরেশতাকূল ও জিবরিল তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে সকল বিষয় নিয়ে অবতীর্ণ হয়, ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত ইহা শান্তিময়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

قال صلى الله عليه وسلم: من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه.

যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে লাইলাতুল কাদর জেগে ইবাদত করল তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

উম্মুল মু'মিনীন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত:

يا رسول الله أرأيت إن وافقت ليلة القدر ما أدعو قال تقولين اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني قال الشيخ الألباني: الحديث صحيح.

হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি যদি লাইলাতুল কাদর পাই কি দোআ করব? তিনি বলেন তুমি বলবে:

اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني

সিয়াম সংক্রান্ত কিছু মাসলা- মাসায়েল:

ক. রোযা ভঙ্গের কারণ সমূহ:

রোযা ভঙ্গকারী বিষয় হচ্ছে আটটি,আর তা হলো নিম্নরূপ:

১. স্ত্রী সহবাস করা,যদি রোযাদারের পক্ষ থেকে রমাদানের দিনের বেলায় সহবাস সংঘটিত হয় তাহলে তার উপর রোযার কাযা সহ চুড়ান্ত কাফ্ফারা আদায় করা ওয়াজিব। চুড়ান্ত কাফফারা হচ্ছে; একজন গোলাম আযাদ করা,তা না পেলে দু'মাস একাধারে রোযা রাখা, আর এতে যদি সক্ষম না হয় তা হলে ষাটজন মিসকিনকে একবেলা খানা খাওয়ানো।

২. জাগ্রত অবস্থায় হস্তমৈথুন,সহবাস, চুম্বন,আলিঙ্গন অথবা এ জাতীয় কোন কাজের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটানো।

৩. পানাহার করা, চাই তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হোক বা ক্ষতিকর যেমন:ধুমপান।

৪. খাদ্য সরবরাহকারী এমন ইনজেকশন দেয়া যা ক্ষুধা নিবারন করে। কেননা এ ধরনের ইনজেকশন পানাহারের অন্তর্ভুক্ত। পক্ষান্তের যে সমস্ত ইনজেকশান খাদ্য সরবরাহ করে না তা রোযা নষ্ট করে না যদিও তা মাংসে অথবা রগে ব্যবহার করা হোক না কেন। কন্ঠনালীতে অথবা গলদেশে তার স্বাদ পাওয়া যাক অথবা পাওয়া না যাক এতে কোন অসুবিধা নেই।

৫. সুঁইয়ের মাধ্যমে রক্ত প্রদান করা যেমন; রোযাদারের যদি রক্তক্ষরণ হয় তার এ রক্তক্ষরণ মিটানোর জন্য ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত প্রদান করা।

৬. হায়েয ও নিফাসের রক্ত বের হওয়া।

৭. শিঙ্গা অথবা এ জাতীয় কোন কিছুর মাধ্যমে রক্ত বের করা তবে এমনিতে রক্ত বের হলে যেমন:নাক থেকে রক্ত বের হওয়া, অথবা দাত উঠানোর কারণে রক্ত বের হওয়া অনুরূপ কিছু রোযা নষ্ট করে না। কেননা এ ধরনের রক্ত বের হওয়া হুকুমের দিক থেকে শিঙ্গার মত নয় এবং শিঙ্গার পর্যায়ভুক্তও নয়।

৮. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা। যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।

হায়েয ও নেফাসের রক্ত বের হওয়া ব্যতীত বাকী রোযা ভঙ্গকারী বিষয়সমূহের ব্যাপারে ৩ টি শর্ত রয়েছে:

১. ইচ্ছাকৃতভাবে করা, ভুলবশত: না করা

২. জোরপূর্বক বাধ্য হয়ে না করা

৩. বিধান সম্পর্কে জেনে- বুঝে করা।

সুতরাং রোযাদার যদি ভুলবশত: অথবা না জেনে আথবা জোরপূর্বক বাধ্য হয়ে রোযা ভঙ্গকারী কোন কিছু করে থাকে তাহলে রোযাদারের রোযা ভঙ্গ হবে না। এর প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহতা'লার বাণী:

رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا

"হে আমাদের রব! আমরা যদি বিস্মিত হই অথবা ভুলবশত: কোন কিছু করি তাহলে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করোনা। "[সুরা আল বাক্বারাহ-২৮৬]

এবং তার বাণী:

إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْأِيمَانِ

আর সে ব্যতীত যাকে জোরপূর্বক বাধ্য করা হয়েছে অথচ তার অন্তর ঈমানে পরিপূর্ণ।" [সুরাতুন নাহাল-১০৬]

এবং তার বাণী:

وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ

আর যে ক্ষেত্রে তোমরা ভুল করে থাক সে ক্ষেত্রে তোমাদের কোন দোষ নেই, কিন্তু তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকলে তা অপরাধ হবে। [সুরা আল আহযাব-৫]

সুতরাং রোযাদার যদি ভুলবশত: কোন কিছু খায় অথবা পান করে তার রোযা নষ্ট হবে না; কেননা সে বিস্মৃত হয়েছে।

যদি সে কোন কিছু খায় অথবা পান করে এ বিশ্বাসে যে সূর্যাস্ত গিয়েছে অথবা ফজর এখনো উদিত হয়নি এতে তার রোযা নষ্ট হবে না; কেননা এ ব্যপারে সে অজ্ঞ বা মূর্খ।

রোযাদার যদি কুলি করে, এতে পানি তার গলদেশে অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রবেশ করে যায় তাহলে তার রোযা বিনষ্ট হবে না; কেননা সে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি করেনি।

যদি রোযাদারের ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হয়ে যায় তাহলে তার রোযা নষ্ট হবে না; কেননা সে এ ব্যাপারে ইচ্ছাধীন ছিল না।

বিশেষ জ্ঞাতব্য বিষয়সমূহ:১.অপবিত্র অবস্থায় রোযাদারের জন্য রোযার নিয়্যত করা বৈধ। অত:পর ফজর উদিত হওয়ার পর সে গোসল সেরে নিতে পারবে।

২.যদি কোন মহিলা রামাদান মাসে হায়েয অথবা নিফাস হতে ফজর উদিত হওয়ার পূর্বে পবিত্রতা লাভ করলে তাহলে ঐ দিনের রোযা রাখা তার উপর ওয়াজিব, যদিও সে ফজর উদিত হওয়ার পর গোসল করে থাকে।

৩.রোযাদারের জন্য দাঁত উঠানো, ঘাতে ঔষধ ব্যবহার করা, চোখে অথবা কানে ড্রপ দেয়া জায়েয, এতে রোযা ভঙ্গ হবে না যদিও কন্ঠনালীতে ড্রপের স্বাদানুভব করা যায়।

৪.রোযাদারের জন্য দিনের সকল সময় মেসওয়াক করা জায়েয,এটা তার জন্য সুন্নাত যেমনিভাবে রোযাদার ছাড়া অন্য ব্যক্তিদের জন্য মেসওয়াক করা সুন্নাত।

৫. রোযাদারের জন্য প্রচন্ড গরম ও পিপাসা লাঘব করে এমন কাজ করা জায়েয। যেমন: পানি ব্যবহার করে ঠান্ডা হওয়া এবং এয়ারকন্ডিশনের নিচে অবস্থান করা, ভেজা কাপড় দিয়ে মাথা ঠান্ডা করা।

৬. রোযাদারের জন্য রক্তচাপ বা অন্য কারণে সৃষ্ট শ্বাস কষ্ট লাঘব করার জন্য মুখে স্প্রে ব্যবহার করা জায়েয।

৭.রোযাদারের জন্য দু'ঠোঁট শুকিয়ে গেলে তা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নেয়া এবং মুখ শুকিয়ে গেলে গরগরা করা ব্যতীত শুধুমাত্র কুলি করা জায়েয।

১০. রোযাদার তার উপর ওয়াজিব বা অপরিহার্য কাজসমূহ সংরক্ষণ করে চলবে, হারাম বা নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে দূরে সরে থাকবে। রোযাদার পাঁচ ওয়াক্ত নামায সময়মত জামাআতের সাথে যথাযথভাবে আদায় করবে-যদি সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয় যাদের জন্য জামাআত প্রযোজ্য।

রোযাদার মিথ্যা, পরনিন্দা, ধোকা, সূদি লেনদেনসহ সকল হারাম কাজ ও কথা পরিত্যাগ করে চলবে। কেননা নবী এরশাদ করেছেন:

من لم يدع قول الزور والعمل به و الجهل فليس لله حاجة في أن يدع طعامه و شرابه.

যে মিথ্যা কথা, সে অনুযায়ী কাজ ও মূর্খতা ত্যাগ করেনি আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই সে তার পানাহার বর্জন করুক।

১১. মুসাফিরের জন্য সর্বাবস্থায় রোযা ভঙ্গ করা বৈধ, যদিও সফরে তার কোন প্রকার কষ্ট না হয়। এমনকি রোযা রাখতে শারিরিক কোন ধরনের সমস্যা না হয়।

১২. যদি কোন ব্যক্তি রোযা রেখে মারাত্মক ক্ষুধার্ত অথবা কঠিন পিপাসার্ত হয়ে পড়ে, যাতে সে তার মৃত্যু কিংবা কোন অঙ্গ হানির আশংকা করে থাকে তাহলে তার জন্য রোযা ভঙ্গ করা বৈধ।

১৩. ইস্তেহাযার (নিয়মিত হায়েযের রক্ত নয় এমন রক্তস্রাব) রক্তস্রাব রোযা নষ্ট করে না, এ ধরনের রক্তস্রাবে আক্রান্ত মহিলার উপর রোযা রাখা ওয়াজিব, তার জন্য রোযা ভঙ্গ করা জায়েয নেই।

১৪. রোযাদার টুথ ব্রাশ ও টুথ পেস্ট ব্যবহার করতে পারবে, এতে তার রোযা নষ্ট হবে না।

১৫. যে ব্যক্তির রোযা ভঙ্গের কারণ স্পষ্ট যেমন: অসুস্থতা; তার জন্য প্রকাশ্যে পানাহার করা বৈধ এবং কোন অসুবিধা নেই। এতে রামাদানের অথবা রোযার মর্যাদা হানি হবে না। পক্ষান্তরে যার রোযা ভঙ্গের কারণ অপ্রকাশ্য যেমন: হায়েযের রক্তস্রাব; তার জন্য উত্তম হচ্ছে গোপনে পানাহার করা। যাতে রোযা নষ্ট করার তোহমত হতে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

খ. যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না, কিন্তু আমাদের কাছে এসব বিষয় অস্পষ্ট:

কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা রোযা ভঙ্গের কারণ নয়, কিন্তু আমরা অনেকেই এগুলোকে রোযা ভঙ্গের কারণ মনে করে মানুষের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করে থাকি। এ ব্যাপারে আমাদের স্পষ্ট জ্ঞান থাকা দরকার। তাই নিম্নে এসব সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।

১. ভুলক্রমে পানাহার করা।

২. ভুলবশতঃ স্ত্রী সহবাস করা

৩. কারো প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে অথবা অসৎ খেয়াল করে বীর্যপাত ঘটানো, তবে প্রবৃত্তির তাড়না সৃষ্টিকারী বারবার দৃষ্টি রোযা নষ্ট করবে।

৪.শরীরে এমনকি নাকে মুখে তৈল ব্যবহার করা।

৫. সুরমা ব্যবহার করা যদিও সুরমার স্বাদ উপলব্ধি হয়।

৬. অনিচ্ছাকৃত কন্ঠনালীতে ধোয়া অথবা ধূলা-বালি প্রবেশ করা।

৭. জুনুব বা অপবিত্র অবস্থায় সকাল করা, এমনকি তাতে সারদিন গড়িয়ে গেলেও রোযা নষ্ট হবে না।

৮. রোযা অবস্থায় মেসওয়াক করা, যদিও তা দিনের শেষ অংশে হয়। দিনের শেষ অংশে মেসওয়াক করাকে কেউ কেউ মাকরূহ বললেও এ বক্তব্য সঠিক নয়।

৯. রোযা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হওয়া। যেহেতু এ ব্যাপার রোযাদারের ইচ্ছাধীন নয়।

১০.সূর্য ডুবে গেছে অথবা ফজর এখনো হয়নি এ ধারণা করে পনাহার করা।

১১. এমন ইনজেকশন নেয়া যা খাবারের সহায়ক নয়, যেমন: গুহ্যদ্বারে অথবা রগে ইনজেকশন নেয়া বা ডুশ ব্যবহার করা।

১২. কিডনি ডায়লোসিস করা।

১৩.চোখে অথবা কানে ড্রপ ব্যবহার করা। তবে সম্ভব হলে পরিহার করা উত্তম।

১৪. গরগরা করার ঔষধ ব্যবহার করা, তবে এ শর্তে তা ব্যবহার করবে, যেন ভিতরে প্রবেশ না করে।

১৫. পরীক্ষার জন্য রক্ত প্রদান করা।

১৬. কুলি করার সময় অনিচ্ছাকৃত মুখে পানি ঢুকে যাওয়া।

১৭. স্ত্রীর সাথে কোলাকুলি, চুম্বন, স্পর্শ ও মেলামেশা করা, তবে শর্ত হচ্ছে এ ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।

১৮. ডায়াবেটিস রুগী ইনসুলিন ব্যবহার করা।

১৯. অসুস্থতার কারণে বিভিন্ন প্রকার স্প্রে ব্যবহার করা।

২০. রোযা রেখে খাবারের স্বাদ গ্রহণ করা বা টেস্ট করা।

গ. রোযার আদব ও সুন্নাতসমূহ:১. সাহরী করা, এবং ফজরের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সাহরী খাওয়াকে বিলম্ব করা।

২. সূর্যাস্তের সাথে সাথে কোন প্রকার বিলম্ব না করে ইফতার করা।

৩. রোযাদার রোতাব (কাঁচা-পাকা খেজুর) দিয়ে ইফতার করবে, যদি তা না পায় তাহলে পাকা খেজুর খেয়ে, আর যদি তাও না পায় পানি পান করে, আর যদি তাও না পায় তাহলে হালাল খাদ্য দিয়ে ইফতার করবে, যদি রোযাদার তাও না পায় তাহলে অন্তরে অন্তরে ইফতারীর নিয়্যত করবে কোন কিছু পাওয়া পর্যন্ত।

৪. এ সময় নিজেকে বেশী বেশী দো'আ ও ইসেতেগফারে মশগুল রাখা।

৫. রোযাদারের জন্য সুন্নাত হচ্ছে বেশী বেশী নেক আমল করা এবং সকল প্রকার নিষিদ্ধ- হারাম কাজ হতে বিরত থাকা।

৬. সকল প্রকার অশ্লীল কথা ও কাজ হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা।

৭. নানা প্রকারের খানা অধিক পরিমাণে ভক্ষণ না করা।

৮. সাধ্যানুযায়ী বেশী পরিমাণে সকল ধরনের বদান্যতা ও দান- খায়রাত করা।

৯. ইফতারের পর এ দো'আ পড়া:

ذهب الظمأ و ابتلت العروق و ثبت الأجر إن شاء الله.

ঘ. রোযাদারের জন্য যা করা শরীয়তসম্মত নয়, বরং বিদ'আত:

১. ইফতারে নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ ৫/১০ মিনিট সতর্কতা মনে করে দেরী করা। অনুরূপভাবে সাহরীতেও সতর্কতার নামে ২০/২৫ মিনিট আগে পানাহার ত্যাগ করা ।

২. রোযাদার রোযা রাখার কারণে সম্পূর্ণরূপে কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকা।

৩. نويت أن أصوم غداً এ জাতীয় নিয়ত মুখে পড়ে রোযা শুরু করা।